বেশ ভালোই শীত পড়ল। আর শীত পড়া মানেই আমাদের মনে পড়ে ভ্যাসলিনের কথা। আট থেকে আশি সকলের এই জিনিসটি না হলে কিন্তু এই শীতে একদম চলে না।
তবে, আপনারা কি এই ভ্যাসলিনের সব রকমের উপকারিতা জানেন? জানেন ঠিক কি কি ভাবে আপনার ত্বকের জেল্লা ধরে রাখতে আর যত্ন নিতে এই শীতে ব্যবহার করবেন ভ্যাসলিন
১. ঠোঁট ফাটা আটকাতে ঠোঁট ফাটা বন্ধ করতে সেই কবে থেকে আমরা ভ্যাসলিন ব্যবহার করে আসছি। দিনে যে কোনও সময়েই আমরা ভ্যাসলিন মেখে নিই ঠোঁটে। আর আমরা উপকারও তো পাই এতে। ঠোঁট আমাদের ত্বকের মধ্যে সবচেয়ে সেনসিটিভ অংশ। তাই এটি খুব তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়। একটু ভ্যাসলিন রাতে ঘুমোতে যাবার আগে ব্যবহার করলেই কিন্তু ঠোঁট ফাটার থেকে এই শীতে রেহাই পাবেন।
২. নাকের জ্বালা বন্ধ করতে এই শীতের সময়ে আরেকটি খুব বড় সমস্যা হয় নাক সুড়সুড় আর নাক শুকিয়ে যাওয়া নিয়ে। সর্দি হলে নাক থেকে জল পড়ার পাশাপাশি এই সমস্যাও কিন্তু আমাদের খুবই ভোগায়। যতই আমরা রুমাল বা ন্যাপকিন ব্যবহার করি না কেন এই সব জিনিসের ঘষায় নাক আরও ড্রাই হয়ে যায়। তাই এই শীতে ভ্যাসলিন ব্যবহার করুন। নাকের চারপাশে অল্প ভ্যাসলিন লাগিয়ে রাখলে ওই অংশ তার ময়েশ্চার ফিরে পাবে।
৩. ম্যাট লিপস্টিপ হি অন্য সময়ে ম্যাট লিপস্টিক পরে বেশ ফ্যাশনিস্তা হওয়া যায়। কিন্তু শীতের সময়ে এই ম্যাট লিপস্টিক ব্যবহার করাটাই আমাদের কাছে দুঃস্বপ্নের মতো মনে হয়। ম্যাট লিপস্টিক আমাদের ঠোঁটের আসল টেক্সচার খানিক ধরে রাখে। আর ডিপ লিপস্টিক তার রঙ দিয়েই ঠোঁট ঢেকে দেয়। তাই ম্যাট লিপস্টিক সাধারণ সময়ে পরে বোল্ড লুক আনলেও শীতে তা হয় না। এই সময়ে ঠোঁট ফেটে থাকে। কিন্তু ঠোঁটে আগে ভ্যাসলিন দিয়ে খানিক পর যদি ম্যাট লিপস্টিক ব্যবহার করেন, তাহলে কিন্তু কোনও সমস্যাই হয় না।
৪. ডার্ক সার্কেল প্রতিরোধে ঠোঁটের মতো আরেক সেনসিটিভ জায়গা হল চোখের নিচের অংশ। শীতের সময়ে আমরা খুব একটা জল ধরতে চাই না। তাই স্কিন ক্লিনসিং বা ময়েশ্চারাইজিং অনেক সময়ে আমরা বাদ দিয়ে ফেলি। প্রতিনিয়ত ময়েশ্চার হারাতে হারাতে এই অংশও কিন্তু তার জেল্লা হারিয়ে ফেলে। কিন্তু জেল্লা ফিরে আসতে পারে ভ্যাসলিনের হাত ধরে। তুলোয় একটু ভ্যাসলিন নিয়ে চোখের নিচের অংশে লাগিয়ে নিন। ১০ মিনিট রেখে জল দিয়ে মুছে নিন। টানা এটি করতে থাকলে খুব তাড়াতাড়ি দেখবেন চোখের তলার কালি চলে গেছে।
৫. পায়ের যত্ন গোড়ালি ফেটে যাওয়া, পায়ের আঙুলের মাঝে জ্বালা করা, ড্রাই হয়ে যাওয়া খুব সাধারণ ঘটনা এই শীতে। আর দিনের পর দিন পায়ে ঠিক করে জল না দেওয়ার জন্য, ময়েশ্চার না থাকার জন্য কিন্তু বাজে গন্ধ আসতে পারে পা থেকে। রোজ রাতে শুতে যাওয়ার আগে একটু ভ্যাসলিন দিন পায়ে। তার ওপর দিয়ে মোজা পরে নিন। এতেই আপনার পা সার্বিক ভাবে সুন্দর থাকবে।
৬. কনুই শুকিয়ে গেলে কনুই শুকিয়ে কালচে হয়ে যাওয়া আর খড়খড়ে হওয়ার সমস্যার সমাধান এই ভ্যাসলিন। রোজ দিনে যতবার পারবেন কনুইতে দিন ভ্যাসলিন। জল দিয়ে ধোয়ার দরকার নেই। টানা একমাস এটা করলে আস্তে আস্তে দেখবেন কনুই তার আগের রঙ ফিরে পেয়েছে। খুব ভাল হয় যদি উষ্ণ জলে স্নান করে আসার পর এটি করেন। এতে ভ্যাসলিন স্কিনের ভিতরে ঢুকতে পারবে সহজে। দেখবেন এই শীতে আর খুব একটা টানছে না কনুই।
৭. স্কিনের লালচে হওয়া অনেক সময়ে শীতকালে ঘুম থেকে উঠে আমরা দেখি আমাদের গাল লালচে হয়ে গেছে। আর বেশ জ্বালাও করে সেই জায়গাটা। এটা হয় কম জল খাওয়ার জন্য আর ময়েশ্চারাইজিং কিছু নিয়ম করে ব্যবহার না করার জন্য। স্কিন তার হাইড্রেশন হারিয়ে ফেলে। রোজ রাতে আর কিছু ব্যবহার করুন আর না করুন, ভ্যাসলিন অবশ্যই হাতে, মুখে, গলায় মেখে নিন। সারা রাত রেখে দিন। দেখবেন এই লালচে হয়ে যাওয়া কমে যাবে।এই কয়েকটা ভ্যাসলিনের প্রয়োগ অনবদ্য। সব নিয়ম যদি ব্যবহার করতে পারেন তাহলে এই পার্ট সিজনে আর কোনও চিন্তাই থাকবে না।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন