সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ইভ্যালির ৭টি গাড়ি নিলামে

 দেশের আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির সাতটি o গাড়ি নিলামে তোলা হচ্ছে। ইভ্যালির ব্যবস্থাপনায় হাইকোর্ট গঠিত বোর্ডের সদস্য ও প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহবুব কবীর আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নিলাম আহ্বান করেছেন। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি গাড়িগুলোর নিলাম হবে। নিলাম বিজ্ঞপ্তিতে দেখা গেছে, ইভ্যালির মালিকানাধীন একটি রেঞ্জ রোভার, একটি টয়োটা প্রিউস, একটি টয়োটা সি এইচ আর, দুটি টয়োটা এক্সিও, একটি হোন্ডা ভেজেল ও একটি টয়োটা মাইক্রোবাস আপাতত নিলামে তোলা হয়েছে। এসব গাড়ির ন্যূনতম নিলাম মূল্যও উল্লেখ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। ২০২০ সালে তৈরি রেঞ্জ রোভারের ন্যূনতম নিলাম মূল্য এক কোটি ৬০ লাখ টাকা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া টয়োটা প্রিউসের ন্যূনতম দর ১৩ লাখ ৫০ হাজার, টয়োটা সিএইচআর দর ১৮ লাখ, টয়োটা এক্সিওর প্রতিটির দর ৯ লাখ ১৮ হাজার, হোন্ডা ভেজেলের দর ১৬ লাখ ও টয়োটা মাইক্রোবাসের ন্যূনতম দর ১২ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। আগ্রহী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ধানমন্ডির উইন্সকোর্ট অফিস থেকে এ নিলামের নিবন্ধন কার্ড নিতে পারবেন। ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নিলামের দরপত্র জমা দেওয়া যাবে। ৫ ও ৬

পেটের দায়ে রিকশা চালিয়ে এখন বিসিএস ক্যাডার, মাকে চড়ালেন স্বপ্নের বিমানে


বিমানের আওয়াজ কানে বাজলেই যেকোনো কেউ একবার হলেও আকাশের দিকে তাকান। গ্রাম হলে তো কথাই নেই; বাচ্চাদের সঙ্গে বৃদ্ধরাও বিমান দেখতে ঘর থেকে দৌড়ে উঠোনে চলে আসেন। তেমনই একজন গীরু বালা রায়।

আকাশে ওড়া বিমান দেখতে দেখতে প্রায়ই আফসোস করতেন আর বলতেন, ‘একদিন যদি চড়তে পারতাম….’ এ বলে দীর্ঘ নিশ্বাস নিতেন। কারণ গীরু বালা রায়ের সংসারে অনটন। নুন আনতে পান্তা ফুরায় দশা। আর বিমানে চড়া তো এভারেস্টের চূড়ায় উঠার মতোই দুঃস্বপ্ন। তবু মাকে কথা দিয়েছিলেন ছোট ছেলে শিপন রায়। বলেছিলেন চাকরি হলেই পূরণ করবেন মায়ের স্বপ্ন। অবশেষে মায়ের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।

গত বুধবার বিকেলে ইউএস বাংলার একটি ফ্লাইটে চড়িয়ে মাকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে আনেন আদরের ছোট ছেলে শিপন রায়। এর আগের দিন মঙ্গলবারেই ৩৮তম বিসিএসের নন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হন শিপন রায়।

শিপন রায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে এমএ প্রথম শ্রেণিতে তৃতীয় হন। এমফিল করারও প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এর মধ্যেই এলো মায়ের স্বপ্ন পূরণ করা ছেলেটির চাকরির সুখবর।

যদিও শিপনের উঠে আসার গল্পটা অনেক সংগ্রামের। কী করেননি এ জীবনে। ১০ বছর বয়স থেকেই শুরু হয় তার লড়াই। রিকশা চালিয়ে প্রথম রোজগার। নরসুন্দরের কাজ, ধান রোপণ, বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাঁকড়া, তেল, সবজি, মাছ-শুঁটকি বিক্রি সব পেশাতেই হাত বসাতে হয়েছে শিপনের। শুধু তাই নয়; জীবনের তাগিদে গরুর গোবর দিয়ে লাকড়ি বানিয়েও বিক্রি করেছেন। করোনায় গ্রামে গিয়ে ৭০ শতক জমিতে নিজেই আমনের বর্গাচাষ করছেন। এবার পূরণ করলেন মায়ের স্বপ্ন।

শিপন রায় বলেন, নন ক্যাডারে সরকারি মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক (বাংলা) হিসেবে সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত হতেই তড়িঘড়ি করে নেমে পড়ি মায়ের স্বপ্নপূরণে। বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করে প্রায় মধ্যরাতে জোগাড় করি বিমানের টিকিট। বুধবার ভোরে ফেনীর সোনাগাজীর চরচান্দিয়ার বাড়ি থেকে রওনা হই ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে। বিকেল তিনটার ফ্লাইটে চড়ে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে নামি। সেখান থেকে পুনরায় ঘরে ফেরা।

মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পেরে শিপন রায়ের মুখেও হাসি ফুটেছে। শিপন বলেন, ‘মায়ের বয়স বাড়ছিল। এখন ৬২ বছর। জীর্ণশীর্ণ শরীরে নানা ধরনের রোগও বাসা বেঁধেছে। তাই ক্রমাগত মনের ভেতর ঘুরফাঁক খেত একটা প্রশ্ন, মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পারবো তো? সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ, চাকরিটা দ্রুতই হলো।’

বিমানবন্দর আর বিমানের ভেতরে মায়ের সঙ্গে স্মারক হিসেবে নানা ছবি তুলে রেখেছেন শিপন রায়। তার একটি ছবিতে দেখা যায়, ধপধপে সাদা শার্ট পরা ছেলের পাশে বসে আছেন মা গীরু বালা রায়। মুখজুড়ে উপচে পড়ছে হাসির ঢেউ। হাত উঁচিয়ে ছেলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেখাচ্ছেন ভি চিহ্ন।

চট্টগ্রামে নামার পর প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে গীরু বালা রায় আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, এ জীবনে আমার দুটি স্বপ্ন ছিল। ছেলের চাকরির খবর শোনা আর বিমানে চড়া। দুদিনে দুটোই পূরণ হয়ে গেছে। আমার আর কিছুই চাওয়ার নেই।

২০০৯ সালে এইচএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন শিপন। তখনই বাবা স্বপ্ন রায়কে হারান তিনি। অভাবের সংসারে দুঃখ-কষ্ট লেগে ছিল সারা বছরই। শিপনের মা গীরু বালা রায়ের সারাজীবনই কেটেছে এ ঘরে ও ঘরে কাজ করে। এখন ৬২ বছর বয়স বলে সেটিও আর পারেন না।

শিপনের এক ভাই নরসুন্দরের কাজ করেন। আরেক ভাই চালান রিকশা। বিয়ে করে তারা দুজনই আলাদা সংসারে উঠেছেন। তিন ভাই মিলে মায়ের খরচ জোগান। বলতে গেলে মাথা গোঁজার জন্য বসতভিটা তোলার এক টুকরো জায়গাও তাদের নেই।

সেজন্য পড়ালেখা চালিয়ে নিতে প্রায় সব কাজেই হাত দিতে হয়েছে শিপনকে। শিপন হাসতে হাসতে বলেন, ২৮ বছরের জীবনে ২৬ ধরনের কাজ করেছি। নাপিতের কাজ করেছি প্রায় ১০ বছর। মানুষের ঘরের টয়লেটও পরিষ্কার করেছি। কদিন আগেও জমিতে কাজ করলাম।

অবশ্য এ দীর্ঘ সংগ্রাম জীবনে মানুষের নানা সহযোগিতাও পেয়েছেন শিপন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনের শুরু থেকেই পাচ্ছেন ফেসবুকভিত্তিক সংগঠন ‘পে ইট ফরওয়ার্ডের’ বৃত্তিও। করোনায় টিউশনি হারালে আবারো পাশে দাঁড়ায় এ সংগঠন। এখান থেকে পাওয়া ১০ হাজার টাকায় নিজের গ্রামে ৭০ শতক জমিতে আমনের বর্গাচাষ করেছেন। এখন সেই ধান ঘরে তুলেছেন।

মানুষের এ ‘ঋণ পরিশোধে’ প্রায় সময় অসহায়দের পাশে দাঁড়াচ্ছেন শিপন। করোনার সময়ে গ্রামে লাশ সৎকারে এগিয়ে গেছেন। গড়ে তুলেছেন প্যারেন্টস কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি সংগঠনও। যেটির মাধ্যমে তিনি রাস্তার পাশে পড়ে থাকা মানসিক প্রতিবন্ধীদের চুল-দাঁড়ি কেটে দিয়ে প্রশান্তি জোগান। অন্যের কাছ থেকে কাপড়চোপড় এনে তুলে দেন তাদের গায়ে।

শিপন বলেন, এখন চাকরি হওয়ায় মানুষকে আর্থিকভাবেও সহায়তা করতে পারবো। এর চেয়ে আনন্দ হয় না। তবে সব আনন্দ যেন মাকে বিমানে চড়িয়ে স্বপ্ন পূরণ করতে পারার আনন্দের কাছে ছাপিয়ে গেছে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

মমতায় ভরা সুন্দর একটি ঘটনা , অসুস্থ বাচ্চাকে নিয়ে হাসপাতালে হাজির বিড়াল মা !

হৃদয় জমে ক্ষীর হয়ে যাওয়ার মতই একটা সুন্দর ঘ’টনা ঘ’টেছে তুরস্কের ইস্তাম্বুলের একটি হাসপাতালে। পথের ধারের একটি মা বিড়াল তার অসুস্থ শিশুকে নিয়ে হাজির হয়েছে সেখানে।ভাগ্য ভালো যে, বিড়ালটি একেবারে সঠিক জায়গাতেই তার সন্তানকে নিয়ে হাজির হয়েছে। ঠিক হাসপাতালটির ডাক্তার নার্সদের কাছেই বিড়ালটি তার শিশুকে মুখে করে নিয়ে যায়। ডাক্তাররাও হতা’শ করেননি। চরম পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। ছোট্ট কটন বলের মত সুন্দর আর নরম বিড়ালছানাটিকে তারা তু’লে নিয়েছেন কোলে। পরীক্ষা করে দেখেছেন, বিড়ালটির বিশেষ কোন সমস্যা আছে কিনা। সঙ্গে তাদেরকে কিছু দুধ আর খাবার দিয়ে আপ্যায়নও করা হয়। এসব পেয়ে তারাও একটু শান্ত হয়।মা ও ছানা উভয়েরই স্বাস্থ্য ঠিক আছে বলে জানা গেলেও পরে তাদের পশু ডাক্তারের কাছেও পাঠায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।মেরভ ওযকান নামের একটি টুইটার একাউন্ট থেকে এই বিড়াল মা ও বিড়ালছানার ছবি পোস্ট করা হয়। এরপর থেকেই ভাইরাল হয়ে পড়ে ঘ’টনাটি। ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন 

যেভাবে গ্যাস থেকে সৃষ্ট পেট ব্যথা দূর করবেন

খাবারের অনিয়ম বা জীবনযাপন পদ্ধতি পরিবর্তনের কারণে অনেকেই গ্যাস থেকে সৃষ্ট পেট ব্যথা ভোগেন। অনেক সময় এমন ব্যথা মা’রাত্ম’ক আকার ধারণ করে। এjতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়। গ্যাসের ব্যথা কমাতে ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। যেমন- ব্যায়াম : গ্যাসের ব্যথা কমাতে কিছু ব্যায়াম করতে পারেন। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যায়াম করলে গ্যাসের ব্যথা কিছুটা হলেও নিরাময় হয়। এজন্য মেঝেতে উপুর হয়ে বসে পা দুটি সাইকেল চালানোর মতো রেখে হাত দুটি পাশে রাখুন। বড় করে নিঃশ্বাস নিন। ধীরে ধীরে ছাড়ুন। এতে গ্যাস থেকে মুক্তি পাবেন। খাওয়ার পরে কিছুটা হাঁটলেও গ্যাসের সমস্যা কমে। এছাড়া গ্যাসের সমস্যা কমাতে নিয়মিত যোগব্যায়াম করতে পারেন। পুদিনা পাতা : গবেষণায় দেখা গেছে, পুদিনা পাতার তেল ডায়রিয়া, গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ভূমিকা রাখে। পুদিনা পাতায় থাকা অ্যান্টিপেসমোডিক গুণাগুণ পেটের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। যারা নিয়মিত গ্যাসের ব্যথায় ভোগেন তারা খাওয়ার আধঘন্টা আগে পুদিনা পাতার ক্যাপসুল খেতে পারেন। গ্যাসের ব্যথা নিরাময়ে এই পাতার রস, তেলও খেতে পারেন। হিট প্যাড : কিছু গবেষণা বলছে, হিটিং প্যাড ব্যবহার করলে অতিরিক্ত গ

দিঘার সমুদ্রে ধরা পড়লো ৬০০ কেজি ওজনের হাঙ্গর’ দাম ৮০ হাজার।

সমুদ্রে মাছ ধ’রাকালীন প্রায়শই মৎস্যজীবীদের জালে বড়ো বড়ো সামুদ্রিক মাছ উঠে আসে। সেই সামুদ্রিক মাছ নিলামে বেশ ভালো দরেই বিক্রি হয়ে থাকে। এবারেও কিন্তু তার অন্যথা হলো না।  সম্প্রতি দিঘায় মৎস্যজীবীদের জালে ধ’রা পড়েছে বিশাল আকৃতির এক হা’ঙ্গর! প্রায় ৬০০ কেজি ওজনের ওই হা’ঙ্গরকে দানবের স’ঙ্গে তুলনা করলেও কিছু বেশি বলা হয় না। মৎস্যজী.বীদের জালে এই বিশাল আকৃতির হা’ঙ্গর ধ’রা পড়তেই দীঘার সমুদ্র সৈকতে নিমেষের মধ্যে খবর ছড়িয়ে যায়। হা’ঙ্গর দেখতে সমুদ্র সৈকতে ভিড় জমান পর্যটকরা এবং স্থানীয়রা। হা’ঙ্গর দেখতে সমুদ্র সৈকতে রীতিমতো হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। উৎসাহী মানুষদের মধ্যে হাঙরের ছবি ক্যামেরা বন্দী করার হিড়িক পড়ে যায়। দানব আকৃতির মাছ উ’দ্ধারকে কেন্দ্র করে এদিন দীঘার সমুদ্র সৈকতে বেশ চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।এদিকে সমুদ্রগ’র্ভ থেকে দানব আকৃতির সামুদ্রিক হাঙর উ’দ্ধার করার পর মৎস্যজীবীরা সেটিকে দিঘা মোহনার মৎস্য নিলাম কেন্দ্রে নিয়ে আসেন। সেখানেই হাঙরটিকে কেন্দ্র করে দীর্ঘক্ষন দরাদরি চলে। শেষমেষ সিরাজ খান নামক এক ব্যবসায়ী মৎস্যজীবীদের থেকে মাছটি কিনে নেন। ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে মৎস্যজীবীদের থেকে